গর্ভধারণের সময় নারীকে চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ দেয়ার ব্যাপারে ডাক্তাররা চরম সতর্কতা অবলম্বন করে থাকেন। এর ফলে আগে তারা গর্ভবতী নারীদেরকে করোনাভাইরাসের টিকা এড়িয়ে চলার কথা বলতেন।
কিন্তু এখন এ সংক্রান্ত অনেক তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, যার ফলে ডাক্তারদের দেয়া আগের পরামর্শ বদলে গেছে। শুধু তাই নয়, গর্ভবতী নারীদের এখন এই টিকা নেয়ার জন্য আরো বেশি করে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
কারণ করোনাভাইরাসের কারণেই প্রেগন্যান্সি বা গর্ভধারণ হুমকির মুখে পড়তে পারে।যারা নারীর ওভারিতে টিকা জমা হওয়ার দাবি প্রচার করছেন তারা একটি ভুল তথ্য বেছে নিয়েছেন।
তারা আসলে বলছেন, ওভারিতে জমা হওয়া চর্বির কথা। টিকার কথা নয়।
টিকা নেয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর ওভারিতে চর্বির মাত্রা আসলেই বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ টিকার মধ্যে যেসব উপাদান আছে সেগুলো শরীরের যে জায়গায় ইঞ্জেকশন দেয়া হয়েছে সেখান থেকে শরীরের অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে তখনও যে তাতে ভাইরাসের জেনেটিক উপাদান রয়ে গেছে- এর পক্ষে কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।যুক্তরাষ্ট্রে নারীর প্রজনন ক্ষমতা সংক্রান্ত চিকিৎসক র্যান্ডি মরিস এবিষয়ে একটি গবেষণা করেছেন। তার কাছে আইভিএফ চিকিৎসা নিতে আসা কিছু নারীর ওপর নজর রাখেন তিনি। দেখার চেষ্টা করেন করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার কারণে তাদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে কীনা।
ড. মরিসের গবেষণায় ১৪৩ জন নারী অংশ নিয়েছেন যাতে টিকা নেয়া, না নেয়া এবং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন এমন নারীরাও ছিলেন। দেখা গেছে তাদের মধ্যে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে তেমন কোনো তারতম্য ঘটেনি।
ড. মরিস বলছেন, যেসব মানুষ এধরনের ভয় ছড়াচ্ছেন তারা কিন্তু ব্যাখ্যা করছেন না যে টিকা নেয়ার কারণে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি, নারীর প্রজনন ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে- এই ধারণা তারা কেন বিশ্বাস করছেন।
সমস্যা হচ্ছে, লোকজনকে আশ্বস্ত করতে বিজ্ঞানীরা যখন তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরেন, তার আগেই লোকজন অনলাইনে অন্যান্য বিষয়ের দিকে সরে যান।
যেমনটা ড. মরিস বলছিলেন, এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্বের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে যখনই এগুলোকে মিথ্যা প্রমাণ করা হয়, তখনই লোকেরা গোলপোস্ট অন্যদিকে সরিয়ে নেয়।
সূত্র : বিবিসি
