সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে বক্তব্য আসছে। প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা নিয়ে বেশ জোরেশোরে কথা হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বিষয়টি এখন সরকারের উচ্চমহলের মুখে মুখে। একই সাথে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা বলছেন, তারাও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলেই প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে পারবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নির্ভর করছে সরকারের ওপর। আমরা সরকারি নির্দেশনা পেলে সশরীরে পাঠদান শুরু করব। এ বিষয়ে আমাদের সক্ষমতা রয়েছে। আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস খোলারও সব প্রস্তুতি আমাদের আছে।
অন্য দিকে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস)। বিশেষ করে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে তারা। সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট বুঝতে সুবিধা হবে বলে জানান শিক্ষক নেতারা।
সমিতির সভাপতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের মুখপাত্র নজরুল ইসলাম রনি জানান, দীর্ঘ ১৭ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা বইয়ের জগৎ ছেড়ে ফেসবুক বা পাবজি গেমে কিংবা নেশার জগতে আসক্ত হয়ে পড়ছে এবং মানসিক সমস্যায় ভুগছে। বর্তমানে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট আদান-প্রদান চলছে; কিন্তু শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট ভালোভাবে বুঝতে পারছে না বলে জানা গেছে। তাদের সাথে মতবিনিময় বা সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট বুঝতে সুবিধা হবে। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে পরিস্থিতি বুঝে অন্যান্য শ্রেণীর ক্লাসও চালু করা যেতে পারে।
সর্বশেষ গতকাল রোববার শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনির বক্তব্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অচিরেই খুলে দেয়ার একটি আভাস পাওয়া গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, আমরা সবসময় ভাবছি, আজকে নতুন করে ভাববার কিছু নেই, আমরা আগে থেকেই ভাবছি, পরিকল্পনা করছি। আর সেগুলো বাস্তবায়ন করছি। যেখানে যতটুকু সম্ভব, পরিস্থিতি যতখানি এলাও করছে আমরা তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার এখন নিম্নগামী। কাজেই আমরা আশা করি, সবাই যদি যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে মৃত্যুর হার আরো নেমে যাবে। ব্যাপক হারে করোনারোধী টিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ায় শনাক্ত হার ৫ শতাংশে না নামলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
